হরমুজুল্লাহ হুজুর

 
Written By Sanjir Habib On Feb-27th, 2018

আমার ভৌতিক অভিজ্ঞতা শেযার করি।জীবনে ভুত দেখার চেষ্টা কম করিনি। কেথাও ভুত খুজে পাইনি। জ্বীন সম্পর্কে শুনেছি।কোরআনে আয়াত ও আছে।আয়াতের অর্থ আমি জ্বীন ও ইনসানকে আমার (মহান আল্লাহর) ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। যাই হোক জ্বীন ধরা ছোয়ার বাইরেই রয়ে গেলো।গ্রামের বাড়ীতে একটা গাব গাছে ভুত থাকার কথা শুনেছি।সন্ধ্যায় ভয়ে ভয়ে সেখানে গিয়ে হাজির হয়েছি।ভয় পেয়েছি বিনিময়ে কোন ভূত দেখা হয়ে ওঠেনি। জ্বীনে বা ভূতে আছর করা মানুষ দেখেছি।তাদের চিল্লা পাল্লায় অনেককে অস্থির থাকতে দেখেছি।তারা পানি খুব ভাল বাসে।কাচা মাছের সঙ্গে নাকি ভূত থাকে। ভূত প্রবেশ করে।
শহরবানু ফুফু।অনেক দূর সম্পর্কের আত্নীয় তাকে ভুতে ধরলে তাকে দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে লোক আসতে থাকলো। গায়ে কাপড় চোপড় রাখতে চাইতো না। সে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। তখন আমি অনেক ছোট। ভুতে আছড় করা মানুষ অস্বাভাবিকআচরণ করে তাই জানতাম। তাইআর যাই হোক ভুতের কাছে ধরা পরা যাবে না এটা ভাবতাম। কাপড়চোপর খুলে দাঁড়িয়ে আছি। ভয়ের চেয়ে লজ্জারই বেশি মনে হত।
গ্রামেএ ভুতে ধরার ঘটনা বেশিআর শহরে নেই বললেই চলে। হয়ত মানুষের ভীড়ে ঢাকায় ভূত আসার চান্স নাই ।ভুতের ভয় ও নাই। বিরুধীদল আর সরকারেন কোন্দলে মানুষই পারলে পালায় এমন অবস্থা।
ভুতের গল্প পড়েছি ,হরর মুভি দেখেছি কিন্তু ভুত বা জ্বীনের কোন দেখা পাই নাই।
তবে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি শেয়ার করি। ব্যাপারটা ভৌতিক।
তখন বোধ করি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষে পড়ি।গেলাম বিশ্বইজতেমায় ।আমাদের সঙ্গে মামুন নামে একজন ছিল যে আমার সমবয়সী।নতুন যোশ। নব্য তাবলীগার। তখন শবে মেরাজ কিংবা শবে বরাত হবে।সে ছিল খেদমতে। জামাতের জিম্মাদার হাসিব ভাই এর নিষেধ সত্ত্বে ও সে রোজা রাখলো।রোজা রেখে সারাদিন খেদমত।
রাতের বেলায় সবাই ঘুমে। হঠাৎএকজনের চিৎৎকারে ঘুম ভাঙলো। দেখি মামুন চিৎকার করে সারা পৃথিবীর মানুষের হেদায়েতের প্রার্থনা করছে।

পরে বুঝলাম তাকে জ্বিনে আছড় করেছে। সে রাত্রে কাউকে সঙ্গে না নিয়ে একাই টয়লেটে গেছে। সেখান থেকেই তাকে জ্বীনে আছড় করেছে ।
তাকে পাহাড়ার দায়িত্ব পড়ল জোবায়ের ভাই, মুরাদ ভাই আর আমার উপর।যেহেতু আমরা তিনজন তার কাছে ভীড়তে পারছি।অন্যরা ভয় পাচ্ছে।রাতের ঘুম অসম্ভব হয়ে দাঁড়ালো। তার চিৎকারে বিরাট এক এলাকার লোকের ঘুম হারাম। তার চিৎকার ইয়া আল্লাহ সারা পৃথিবীর মানুষকে হেদায়াত দান কর।(প্রচ্ন্ড জোরে)।তারা মায়ের কাপড়ের বুনা একটা কাথা পরতো ।বাকী সব হারাম মানে সে পরিধান করতো না। দুইফুট দূরে ভুতে ধরা একজন মানুষ থাকছে খাচ্ছে ঘুমুচ্ছে।ভাবেন একবার কেমন অভিজ্ঞতা।
পরে তার চিকিৎসার জন্য হরমুজুল্লাহ হুজুরের কাছে নিলাম ।তিনি তার দুই হাতের কনিষ্ঠ আঙুলী মিশিয়ে দেখলেন একটা ছোট আরেকটা বড়।আঙুলের কর মিলছেনা।
দেখে অবাক হলাম। তিনি তার আঙুলে শক্ত করে ধরা মাত্র মামুন হিন্দীতে কথা বলা শুরু করল।
হিন্দি মানে বাঙলার সঙ্গে হে যুক্ত হিন্দী।শব্দের সঙ্গে হে যুক্ত করছে।হরমুজুল্লাহ হুজুর দোয়া করে পড়া পানি দিলেন।
হরমুজুল্লাহ হুজুর (রহঃ) সম্পর্কে একটু বলি ।তখন তার বয়স ছিল ৯০ +।বোধ করি একমাত্র লোক যার জন্য কাকরাইল মসজিদের নামাজের জামাত অপেক্ষা করত।একদিন ফযরের নামায দেরীতে হচ্ছিল। সবার চেহারা মলিন।সবাই আশঙ্কায় হুজুর মারা গেলেন কিনা? পরে ওনি আসলেন ও জামাতে শরীক হলেন। জীবনে জামাত ছাড়া নামায পড়েন নাই।মাথায় সাদামাটা লম্বা টুপি পড়তেন। তখন বাংলাদেশের দুইজন ইজতেমার ময়দানে বয়ানের সুযোগ পেতেন। তিনি তাদের একজন। তার বাড়ী ছিল সিলেট। সিলেটি ভাষায় কথা রাখতেন।তার খেদমতে যারা থাকতেন। তাদের বেশভূষা দেখলে বুঝা যেত তিনি কতবড় বুজুর্গ!
মামুন যথেষ্ট ভীতি ছড়িয়ে ১৫ দিন পর সুস্থ হয়েছিল। জ্বীনে আছড় করা মানুষের সঙ্গে থাকার অভিজ্ঞতা আমার জীবনে একবারই।

বড়দের সাথে বেয়াদবী করার কারনে, মাওঃ হরমুজুল্লাহ্ সাহেব(রাহিঃ) [____ স্যারকে] বলেছিলেন তোর মউত হবে জিল্লতির সাথে, ঠিক তাই হলো………!!