১ আশারি-মাতুরিদি আল্লাহ তায়ালা ফিজিক্যলি কোথায় আছেন এর উপর আলেমদের দুটো মত

 
Written By Sanjir Habib On Jan-4th, 2017

১ আশারি-মাতুরিদি

আল্লাহ তায়ালা ফিজিক্যলি কোথায় আছেন এর উপর আলেমদের দুটো মত আছে।

১। আথারি মত: আল্লাহ তায়ালা শুধু মাত্র উনার আরশের উপর আছেন, এবং আরশের বাইরে অন্য কোথাও নেই।

২। আশারি-মাতুরিদি মত: আল্লাহ তায়ালা নির্দিষ্ট কোনো স্থানে অবস্থান করেন না।

হাম্বলিরা ১ নং মতের অনুসারি। কিন্তু ২ নং মতের অনুসারিদের আহলে সুন্নাহর অংশ মনে করে। তাই তাদের কাফের বলে না।

সালাফিরা ১ নং মতের অনুসারি। কিন্তু হাম্বলিদের সাথে পার্থক্য হলো তারা ২ নং মতের অনুসারিদের কাফের মনে করে।

এবং হানাফিরা ২ নং মতের অনুসারী। তাই সালাফি আলেমদের মতে প্রায় সকল হানাফি আলেমগন কুফর আকিদা পোষন করেন। শায়েখ মতিউর রহমান মাদানী দা: বা: এর লেকচারে এর রেফারেন্স পাওয়া যায়। এটাকে তারা বলে “ওয়াহদাতুল উজুদ” আকিদা।

২ তকলিদ

অন্ধ ভাবে কোনো মাজহাব অনুসরন করা জায়েজ কিনা?

এ ব্যপারে সালাফি মত হলো: জায়েজ না।
হাম্বলি মত হলো: জায়েজ। অন্যান্য মাজহাবের আলেমদের মতেও জায়েজ।

৩ তাসাউফ

সালাফিদের মতে তাসাউফ সংক্রান্ত সবকিছু হলো বিদআহ এবং পথভ্রষ্টতা।
হাম্বলিরা তাসাউফকে বিদাআহ মনে করে না। হানাফিরাও করে না।

৪ জয়িফ-মওজু হাদিস

জয়িফ মানে দুর্বল বর্ননার হাদিস।�মওজু মানে মিথ্যা বর্ননার হাদিস।

সালাফি আলেমদের মত: জয়িফ আর মওজু হাদিস দুটোই সমান ভাবে পরিত্যজ্য।
হানাফি আলেমদের মত: দুটো সমান না। মওজু হাদিস পরিত্যজ্য। কিন্তু জয়িফ হাদিস শরিয়া হুকুম ছাড়া অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে গ্রহন যোগ্য।

৫ শরিয়তের উৎস

হানাফি মতে চারটি: কোরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াস।
সালাফি মতে দুটি: কোরআন ও হাদিস।

৬ রেফারেন্স

ফতোয়া দেবার সময় কোরআন হাদিস ছাড়াও,

হানাফিগন এই বইগুলোকে রেফারেন্স হিসাবে দেন:
আল হিদায়া
আল মুখতাসারুল কুদুরি,
ফতোয়ায়ে শামি,
ফতোয়ায়ে আলমগিরি
ফতোয়ায়ে হিন্দ।

সালাফিগন এই সকল আলেমদের উক্তি ব্যবহার করেন:
শায়েখ আলবানি
শায়েখ উথাইমিন
শায়েখ ইবনে বাজ
শায়েখ তাইমিয়া।

রাহিমাহুমুল্লাহ।

৭ মোজার উপর মসেহ

সালাফি: ওজু করার সময় সুতি বা নায়লনের প্রচলিত মুজা পড়া থাকলে এর উপর দিয়ে মসেহ জায়েজ। অর্থাৎ না খুলে এর উপর ভেজা হাত দিয়ে মুছে দিলে ওজু হয়ে যাবে।

হানাফি: এটা শুধু মাত্র চামড়ার তৈরি মুজার উপর দিয়ে করলে হবে। প্রচলিত সুতি-নায়লনের মুজার উপর দিয়ে করলে ওজু হবে না।

৮ নামাজে কোরআন শরিফ দেখে দেখে পড়া

সালাফি: নফল সুন্নাহ নামাজে জায়েজ।
হানাফি: করা যাবে না। নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

৯ সিজদায়ে সহু

নামাজে ভুল হয়ে গেলে শেষ বৈঠকে যে দুটি সিজদা অতিরিক্ত করতে হয়

সালাফি: সব কিছু পড়া শেষে, দুই দিকে সালাম ফিরানো আগে, দুই সিজদা করবে এর পর দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে। সহু সিজদার আগে এক দিকে সালাম ফিরানো নেই।

হানাফি: আত্তাহিয়াতু পড়ে এক দিকে সালাম ফিরিয়ে দুই সিজদা করবে। এর পর আবার আত্তাহিয়াতু সহ সব কিছু পড়ে দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।

১০ নামাজে সুরা ফাতিহা

সালাফি: প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়তে হবে। মুক্তাদি যারা ইমামের পেছনে নামাজ পড়ছেন তাদেরকেও পড়তে হবে। ইমাম জোরে কিরাত পড়ুক বা আস্তে। জোরে পড়ার ক্ষেত্রে:

হানাফি: ইমামের পেছনে মুক্তাদিরা সুরা ফাতিহা পড়বে না। ইমাম জোরে পড়ুক বা আস্তে। অধিকিন্তু ৪ রাকাত ফরজ নামাজগুলোর ৩য় ও ৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়া ওয়াজিব না। ঐচ্ছিক। অনেক ইমাম ঐ দুই রাকাতে তিন বার সুবহানাল্লাহ পড়ে রুকুতে চলে যান। সুরা ফাতিহা না পড়ে।

১১ নামাজে হাত বাধা

হানাফি: নাভির কাছে।
সালাফি: বুকের কাছে।

১২ রাফে ইয়াদাইন

রুকু এবং সিজদার পূর্বে আল্লাহু আকবার বলার সময় দুই হাত আবার কানের কাছে তোলা

হানাফি: করবে না।
সালাফি: করবে।

১৩ বেতের:

সালাফি: দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে। এর পর এক রাকাত আলাদা পড়া। কুনুত এবং অন্যান্য দোয়া শেষ রাকাতের রুকুর পর কিন্তু সিজদার আগে দাড়িয়ে পড়া হয়। দুই হাত তুলে।

হানাফি: এক সাথে তিন রাকাত। কুনুত পড়া হয় রুকুর আগে। এবং তিলওয়াত আর কুনুতের মাঝে তকবির বলে আবার হাত বাধা হয়।

১৪ মেয়েদের নামাজ

সালাফি: কোনো পার্থক্য নেই। ছেলেদের মত।

হানাফি: পার্থক্য আছে। তকবির বলার সময় হাত কাধ পর্যন্ত তুলবে। সিজদা দেবার সময় শরির মাটি থেকে উপরে তুলবে না। এধরনের বেশ কয়েকটা পার্থক্য আছে।

১৫ রমজানে তারাবি

সালাফি: ৮ রাকাত। এটাকে মূলতঃ তাহাজ্জুদের নামাজ ধরা হয়।
হানাফি: ২০ রাকাত। তাহাজ্জুদ আর তারাবী ভিন্ন নামাজ ধরা হয়।

১৬ দাড়ি

সালাফি: দাড়ি রাখা ফরজ।
হানাফি: ওয়াজিব।

হানাফি: লম্বা করা উত্তম। তবে এক মুষ্ঠি রেখে বাকিটা কাটা যায়। নাভি থেকে আরো নিচ পর্যন্ত লম্বা করা মাকরুহ। নাভির নিচে যতটুকু আছে কেটে ফেলতে হবে।

সালাফি: লম্বা করে ছেড়ে দিতে হবে। কাটা যাবে না। হানাফিদের মত এক মুষ্ঠি রেখে বাকিটা কাটার অনুমতি নেই। বা নাভির নিচে বড় হয়ে গেলে মাকরুহ হবে সেরকম কথা পাই নি।

১৭ চুল
সালাফি: মেয়েদের চুল কাটা নিষেধ। বরং এটা লম্বা করে ছেড়ে দিতে হবে। ৯০ দশকে এই ফতোয়া ছিলো। এখন পরিবর্তিত হয়েছে কিনা জানি না। এক সময়ে গিনিস বুকস-এ সবচেয়ে লম্বা চুলের রেকর্ড ছিলো সৌদি এক মহিলার।

হানাফি: মেয়েদের চুল কাটার উপর নিষেধ নেই। তবে ছেলেদের মত ছোট করা যাবে না, কারন তাতে দেখতে ছেলেদের মত মনে হবে, যেটা নিষেধ।

১৮ : ওজু

সবচেয়ে বড় দুটো পার্থক্যের প্রথমটা হলো সালাফিরা নাইলনের মুজার উপর মসেহ করা জায়েজ মনে করে। হানাফিরা করে না, শুধু মাত্র চামড়ার মোজার উপর মসেহ জায়জে মনে করে।

এটা নিয়ে সমস্যা হয় কারন মদিনা ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা সবাই কালো মুজা পড়ে থাকে এবং হজ্জের সময় উনারা বিভিন্ন জায়গায় নামাজ পড়ান। উনাদের পেছনে নামাজ হবে কিনা এ প্রশ্নটা তোলা হয়।

দ্বিতীয় পার্থক্য হলো সালাফিদের মতে ওজুর সময়ে ঘাড় মসেহ বিদআহ। এর এক্সট্রিমে গিয়ে বলা হয় ওজু সময়ে ঘাড় মসেহ করলে ওজু, নামাজ, হজ্জ, তোয়াফ কিছুই হবে না। মতিউর রহমান মাদানী দা: বা: এর ভিডিও উল্লেখ যোগ্য, যার লিংক এখানে।

https://www.youtube.com/watch?v=Ib8S_i2xI_M

হানাফিদের মতে ঘাড় মসেহ বিদআহ না। বরং মোবাহ বা মুস্তাহাব। তবে সুন্নাহ না। এবং হানাফিরা সবাই ঘাড় মসেহ করে।

এর বাইরে যে যার মতো আমল করে কিন্তু সমস্যা হয় না যেগুলোতে।

নিয়ত:
সালাফি: নিয়ত ফরজ। নিয়ত ছাড়া ওজু হবে না।
হানাফি: নিয়ত ফরজ না। ওজুর ইচ্ছে ছাড়া যদি কেউ ওজুর অংগগুলো ধুয়ে ফেলে তবে তারও ওজু হয়ে যাবে।

তবে নিয়ত মুখে বলার দরকার নেই কোনো মাজহাবেই।

সালাফি মতে গোসল করলে ওজু হয় না। বরং গোসলের আগে মানুষ যে ওজু করে নেয় সেটার কারনে তার ওজু হবে। ঐ ওজু না করলে গোসলের পরে তাকে আবার ওজু করতে হবে।

হানাফি মতে: গোসল করলে ওজু হয়ে যায়। ফরজ গোসল হোক বা সুন্নাহ।

আরেকটা বড় পার্থক্য হলো

সালাফি মতে: ওজুর কুলি আর নাকে পানি দেয়াও ফরজ, বা ওয়াজিব। না দিলে ওজু হবে না।
হানাফি মতে: এদুটো সুন্নাহ। কেউ কোনো কারনে না করলে ওজু হবে।

এর বাইরে ওজু ভাঙ্গার কারনে কিছু পার্থক্য আছে। যেটা আর এখানে লিখলাম না।

১৯ : জুম্মা

মূল মতভেদ দুটো। প্রথমতঃ খুতবার সময়ে মসজিদে বসার আগে দুই রাকাত নামাজ পড়বে নাকি পড়বে না। এবং দ্বিতীয়তঃ খুতবা বাংলায় দেয়া যাবে কি না।

হানাফি: জুম্মার আগে ৪ রাকাত সুন্নাহ। এবং জুম্মার পরে আরো ৪ রাকাত।
সালাফি: আগে শুধু দাখিলুল মসজিদের দুই রাকাত। পরে ৪ রাকাত সুন্নাহ। অথবা বাসায় গিয়ে ২ রাকাত সু্ন্নাহ।

সালাফি: খুতবা চলাকালীন মসজিদে আসলে দুই রাকাত দুখুলুল মসজিদ পড়ে তার পর বসতে হবে।
হানাফি: ইমাম সাহেব খুতবা দেয়া কালিন কোনো নামাজ পড়া যাবে না। তখন মসজিদে আসলে সরাসরি বসে পড়তে হবে।

সালাফি: এ দেশে খুৎবাহ কিছু অংশ আবরীতে এবং কিছু অংশ বাংলায় দেয়া হয়।
হানাফি: খুৎবাহ সব সময় আরবীতে দেয়া হয়। অন্য কোনো ভাষায় দেয়া নিষেধ।

এর বাইরে প্রচলিত হলো:

সালাফি: ওয়াক্ত হবার পর ইমাম সাহেবে মিম্বরে উঠে যান। এর পর মুয়াজ্জিন আজান দেন। এবং খুতবা আরম্ভ হয়। খুতবা অপেক্ষাকৃত লম্বা হয় নসিহা মূলক কথাবার্তা খুতবাতেই বাংলায় বা আরবীতে বলা হয়।

হানাফি: দুই আজানের মাঝে ঘন্টা খানেক গ্যপ থাকে। এই সময়ে ইমাম সাহেব বাংলায় নসিহা করেন মুসুল্লিদের উদ্যেশ্য। এর পর আজান দিয়ে সংক্ষিপ্ত খুতবা আরবীতে।

২০ : হজ্জ

মিনাতে নামাজ কসর হবে কিনা এবং প্রথম দিনের কাজগুলো আগে পরে করা যাবে কিনা এই দুটো নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। বাকিগুলো যে যার মত করে কোনো সমস্যা ছাড়া।

সালাফি: মিনা-আরাফার দিনগুলোতে নামাজ কসর করতে হবে। মুকিম হোক বা মুসাফির।

হানাফি: মুকিমরা পুরো নামাজ পড়বে। হজ্জের ১৫ দিন আগে যারা মক্কায় এসে থেকেছে তারা পুরো চার রাকাত পড়বে।

হানাফি: ঈদের দিন প্রথমে পাথর মারতে হবে, এর পর কোরবানী এর পর মাথা চাছা। এই সিরিয়াল মেইন্টেইন করা ওয়াজিব। আগে পরে হলে দম দিতে হবে।

সালাফি: উপরের সিরিয়ালটা উত্তম। কিন্তু ওয়াজিব না বা ভাঙ্গলে দম দিতে হবে না।

সালাফি: হজ্জের ফরজ ৪ টা ইহরাম, আরাফা, তোয়াফ, সায়ি।

হানাফি: ৩ টী ইহরাম, আরাফা, তোয়াফ। এর বাইরে সায়ি ওয়াজিব।

সালাফি: মিনার দিনগুলোতে মিনাতে থাকা ওয়াজিব। না থাকলে দম দিতে হবে।

হানাফি: মিনাতে থাকা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। অন্যান্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা থেকে এটা অনেক বেশি জরুরি। কিন্তু না থাকলে দম দিতে হবে না যেহেতু ওয়াজিব না।

হানাফি: তোয়াফে জিয়ারা ১২ তারিখের মধ্যে করা ওয়াজিব। না করলে পরবর্তিতে তওয়াফ করে নিয়ে দম দিতে হবে।

সালাফি: ১২ তারিখের মাঝে করা শর্ত না। পরেও যে কোনো দিন করা যায় এবং এর জন্য দম দিতে হবে না।

সালাফি: তোয়াফে জিয়ারায় রমল হবে না।

হানাফি: তোয়াফে জিয়ারার পরে সায়ি করতে হলে রমল করতে হবে।

এর বর্তমানে এখন পাথর মারার ২য়, ৩য় দিনে সৌদি আলেমগন ভীড়ের জন্য সকাল থেকে পাথর মারা অনুমতি দেন। এটা সম্ভবতঃ আরম্ভ হয়েছে ২০০৭ সাল থেকে।

হানাফি মাজহাবে জোহরের আগে ঐ দিনগুলোতে পাথর মারলে হবে না। সময় মত দ্বিতীয়বার মারতে হবে। বা দম দিতে হবে।

২১ : জানাজা

দৃশ্যমান পার্থক্য দুটো। তবে সুরা ফাতিহা পড়া-নাপড়া নিয়ে মতভেদটায় জোর দেয়া হয় সবচেয়ে বেশি।

সালাফি: জানাজার নামাজের প্রথম তকবিরের পরে সুরা ফাতিহা পড়তে হয়।

হানাফি: প্রথম তকবিরের পরে সানা [সুবহানাকা আল্লা হুম্মা…] পড়তে হয়।

সালাফি: নামাজের শেষে এক দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা হয়।

হানাফি: দুই দিকে সালাম ফিরাতে হয়।

সালাফি: প্রতি তকবিরের সময় হাতও উপরে তুলতে হয়।

হানাফি: হাত উপরে তুলতে হয় না।

এর বাইরে সালাফিরা ৩য় তকবিরের পরে অনেক দোয়া পড়েন। এ জন্য শেষ তকবিরের আগে বেশ দেরি হয়। হানাফিরা সাধারনতঃ রেগুলার যে দোয়াটা আছে সেটা পড়েন।

জানাজার নিয়ম এখানে লিখেছিলাম:

https://www.facebook.com/habib.dhaka/posts/10153569104268176

২২ : তাইমুম

এখানে সালাফিদের নিয়ম হানাফিদের থেকে অনেক সহজ। তবে এগুলো নিয়ে তর্ক হয় না। যে যার মত করে।

তাইমুমের নিয়ম ডিটেলস এখানে লিখেছিলাম।

https://www.facebook.com/habib.dhaka/posts/10153616823283176

বড় পার্থক্য হলো

সালাফি: হাত মুছার সময় শুধু কব্জি পর্যন্ত মুছা হয়।

হানাফি: কুনুই পর্যন্ত মুছা হয়। এর সাথে আংগুল খেলাল করা হয়। কুনুই পর্যন্ত মুছা ফরজ।

২৩ : ইকামত

সালাফি: ইকামতের সময় আজানের শব্দগুলো যতবার বলা হয় তার অর্ধেক বার ইকামতে বলা হয়।

হানাফি: আজানের শব্দগুলো যতবার বলা হয় ততবারই ইকামতে বলা হয়।

প্রশ্নোত্তর

সালাফি আর হানাফি মতের উপর পোষ্টগুলো নিয়ে কিছু আপত্তি পাচ্ছি। যেগুলোর জবাব:

১ “সালাফি মত থেকে আপনি এক্সট্রিম মতগুলো লিখছেন কেন? সঠিক মতগুলোকে না লিখে?”

প্রথম কথা হলো কোনটা সঠিক সেটা ডিটেক্ট করার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি না। মূলধারার মতটা আমি লিখে দিচ্ছি শুধু।

মূলধারা মত বলতে আমি সৌদি আলেমদের কথা। islamqa তে দেয়া ফতোয়া আর বাংলাদেশের প্রখ্যাত সালাফি টিভি আলেমদের কথা। এগুলোকে সোর্স ধরছি।

কোথাও যদি মূলধারার মতটা আমি ভুল লিখি তবে বলে দিলে কারেক্ট করে দেবো, ইনশাল্লাহ।

২ “আপনার কথা ভুল। কারন, ইমাম আবু হানিফা বলেছিলেন ____”

হানাফি মত বলতে আমি ইমাম আবু হানিফার মত বুঝাচ্ছি না। বরং বর্তমানে হানাফি আলেমদের অধিকাংশের সম্মিলিত মত বুঝাচ্ছি। হানাফি রুলিং বলতে যা বুঝায় তার মাঝে খুব কমই ইমাম আবু হানিফার সরাসরি কথা আছে। একটা বড় অংশ পরবর্তি আলেমদের কথা। এবং কিছু ব্যপারে উনার মতের উল্টো কোনো মত হানাফিরা গ্রহন করেছে।

৩ “সুরা ফাতিহা নিয়ে আপনি যেটা লিখলেন সেটা সঠিক সালাফি মত না। এক্সট্রিম মত। ড: খন্দকার জাহাঙ্গিরের লেকচারে উনি বলেছেন_____”

নামাজে সুরা ফাতিহা পড়ার ব্যপারে সালাফি মত আমি লিখেছি এখান থেকে।

https://islamqa.info/en/10995

এখানে অনেক কথা আছে। শেষ কংক্লুশন পড়ে দেখেন। ইমামের পেছনে সকলকে সুরা ফাতিহা পড়তে হবে ইমাম জোরে পড়ুক বা আস্তে।

The correct scholarly opinion is that it is obligatory to recite al-Faatihah when praying alone and it is obligatory upon the imam and those whom he is leading both in prayers where Qur’aan is to be recited out loud and when it is to be recited silently, because of the soundness and specific nature of the texts which indicate that. The aayah (interpretation of the meaning):

এটাই সালাফি মত। এবং আমি বহু বছর ধরে তাই শুনে আসছি তাদের কাছ থেকে।

প্লাস, ডঃ খন্দকার জাহাঙ্গির সার রাহি: সালাফি হানাফি দুটোর মাঝা মাঝি কিছু করতে চাচ্ছিলেন। যে ক্ষেত্রে উনার কথার সাথে মূলধারা সৌদি আলেমগন কথা মিলে না, সে ক্ষেত্রে সৌদি আলেমদের কথাকে মূলধারা ধরেছি।

৪ “আপনি সালাফিদের শরিয়তের উৎস দুটি লিখেছেন। অথচ তারাও ইজামা কিয়াসে বিশ্বাস করে।”

সালাফিদের পক্ষ থেকে ৯০ এর দিকে ইজমা কিয়াসকে একেবারেই অগ্রহনযোগ্য ও শরিয়তের কোনো উৎস না বলা হতো। “আমাদের দলিল শুধু কোরআন হাদিস।”

এর উপর ভিত্তি করে আমি নেটে খোজ লাগিয়েছিলাম এখনও এই বিশ্বাস আছে কিনা। বেশ কয়েকটা পেয়েছি। তাই লিখেছি।

যেমন,

“বাতিল ফিরকার লোকেরা ইজমা ও কিয়াসকে ওয়াহীর আসনে বসিয়েছে এবং বলে থাকে : ইসলামী শারীয়াতের ভিত্তি চারটি বিষয়ের উপর”

https://deenilhaq.wordpress.com/2013/01/03/

“ইজমা শুধু চার খলিফার সময় পর্যন্ত গ্রহনযোগ্য, এবং কিয়াস একেবারেই বাতিল”

https://www.facebook.com/IslamicQUSANS/videos/1174735559269787/

শায়েখ আকরামুজ্জামানের “শরিয়তের দলিল শুধু দুইটি, এর সাথে শরিয়তের দলিল হিসাবে আরো দুইটি যোগ করা যাবে না।”

https://www.youtube.com/watch?v=W-wkoQXCWog

এরকম আরো অনেক।

আমি বলতে পারতাম সালাফিদের মতেও শরিয়তের দলিল চারটি। কিন্তু তখন অন্য পক্ষ আপত্তি করতো। আমার কাছে দুইটিকে মূলধারা মনে হয়েছে।

৫ “যয়িফ হাদিসকে সালাফিরা অগ্রহনযোগ্য মনে করে – বলেছেন, কিন্তু আসলে তা না”

এটা নিয়ে নেটে আমি সালাফির সাথে অনেক তর্ক করেছি। তাদের মত ছিলো যয়িফ হাদিস একেবারই অগ্রহনযোগ্য। এর উপর তারা একটা পিডিএফও পাঠিয়েছিলো আমাকে। এবং এক্সপেরিয়েন্স থেকে দেখেছি কোনো কারনে যদি তারা যয়িফ হাদিসকে গ্রহনযোগ্য বলে তবে তার ক্যটাগরিকে যয়িফ থেকে “এই এই কারনে উপরে” উঠিয়ে তার পর গ্রহন করে। যয়িফ রেখে করে না।

শায়েখ আলবানী রাহি: ও যয়িফ হাদিসকে অগ্রহনযোগ্য মনে করতেন। আরব আলেমদের মুখেও আমি যয়িফ হাদিস অগ্রহনযোগ্য শুনেছি।

তাই এটাকে মূলধারা ধরেছি। যদি লিখতাম “সালাফিরা যয়িফ হাদিসকে শর্ত সাপেক্ষে গ্রহন করে” তবে অন্য পক্ষ আপত্তি জানাতো।

৬ “আপনি তকলিদকে সালাফিরা অগ্রহনযোগ্য মনে করে লিখেছেন। কি্ন্তু এই এই ক্ষেত্র তকলিদ গ্রহনযোগ্য”

Ditto, মানে উপরের মত একই। এই কেইসেও।