হাদিস - ১ আব্দুর রহমান বিন আবদু রাব্বিল কাবা বলেছেন:

 
Written By Sanjir Habib On Aug-3rd, 2016

হাদিস - ১

আব্দুর রহমান বিন আবদু রাব্বিল কাবা বলেছেন:

আমি আব্দুল্লাহ বিন উমর রা: এর কাছে এলাম, উনি কাবার ছায়ায় বসে ছিলেন
উনার চারদিকে অনেক মানুষ জমেছিলো। আমি শুনলাম উনি বলছেন:

একবার আমরা রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সংগে সফরে ছিলাম

একটা মনজিলে থামার পরে, আমাদের মাঝে কেউ তাবু টাংগানো আরম্ভ করলো, কেউ তীর চালনা প্রতিযোগিতা আরম্ভ করলো, কেউ বা জন্তুগুলো নিয়ে দৌড় আরম্ভ করলো।

এই অবস্থায় একজন ডাক দিলেন, “আসসালাতু জামিয়া"। আমরা শুনে সবাই একত্রিত হলাম।

তখন রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন, আমার আগের সব নবী উম্মতদের বলে দিয়ে গিয়েছেন কোনটা তাদের জন্য ভালো, আর কোনটা তাদের জন্য খারাপ। এটা জানানো ছিলো তাদের উপর আল্লাহর হক।

এই উম্মতের প্রথম যুগের মানুষেদের সঠিক পথে রাখা হবে। আর শেষ যুগের মানুষদের উপর বিপদাপদ এবং তারা যা অপছন্দ করে সেগুলো আসবে।

এর পর ফিতনা এত বাড়বে যে মু'মিন বলবেন “এটাতে আমি ধ্বংশ হয়ে যাবো”
এর পর ফিতনা চলে যাবে।
এর পর ফিতনার আবার বাড়বে।
মু'মিন বলবে “না, বরং এবার।”

তোমাদের মাঝে যে চায় আগুন থেকে বাচতে এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে, সে যেন আল্লাহ আর আখিরাতের উপর বিশ্বাস রেখে মৃত্যু বরন করে। এবং নিজে যেটা পেতে পছন্দ করে, সেটা যেন মানুষের জন্য পছন্দ করে।

যে লোক কোনো ইমামকে বায়াত দিলো তার হাত ও অন্তর দিয়ে, সে যেন তার আদেশ পালন করে যতটুকু পারে। এবং অন্য কেউ এসে চ্যলেঞ্জ করলে তোমরা তার ঘাড়ে আঘাত করবে।"

আমি মানুষের মাঝ থেকে মাথা বের করে জিজ্ঞাসা করলাম, “আমি আল্লাহ নামে জিজ্ঞাসা করছি। আপনি কি এটা রাসুলুল্লাহ ﷺ থেকে শুনেছেন?”

উনি উনার দু হাত দিয়ে উনার কান দেখালেন এবং বললেন, “আমি এই দুই কান দিয়ে শুনেছি এবং অন্তর দিয়ে খেয়াল করেছি।”

আমি বললাম, “আমি হলাম আপনার চাচার ছেলে। আমাদের বলুন নিজেদের মাল অবৈধ ভাবে খাওয়া আর নিজেদের হত্যা না করার ব্যপারে। যেমন আল্লাহ বলেছেন – তোমরা তোমাদের মাল নিজেরা অবৈধ ভাবে ভোগ করো না, এবং ভোগ করার জন্য বিচারকের কাছে নিয়ে যেও না'…” সুরা বাকার ১৮৮ নং আয়াত তিলওয়াত করলেন শেষ পর্যন্ত।

উনি দুই হাত একত্র করলেন এবং মুখের উপর রাখলেন। এর পর হাত কিছুটা নামিয়ে বললেন: “আল্লাহর অনুসরনের ক্ষেত্রে তাদের বাধ্য হবে। আর আল্লাহর অবাধ্যতার ক্ষেত্রে তাদের অবাধ্য হবে।”

আব্দুল্লাহ বিন আমর রা: রাসুলুল্লাহ ﷺ থেকেও একই কথা বর্ননা করেছেন। তিনি যোগ করেছেন “এই উম্মতের শেষ যুগে একের পর এক ফিতনা দেখা যাবে যার পরেরটা আগেরটার থেকে বড় হবে।”

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36411 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?bk_no=96&pid=58353

হাদিস - ২

মুসলিম বিন আবি বকর উনার পিতা থেকে বর্ননা করেছেন:
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

শিগ্রই ফিতনা দেখা দিবে।
ঐ সময় শুয়ে থাকা লোক বসে থাকা লোকের থেকে ভালো হবে।
বসে থাকা লোক দাড়িয়ে থাকা লোকের থেকে ভালো হবে।
দাড়িয়ে থাকা লোক হেটে চলা লোকের থেকে ভালো হবে।
হেটে চলা লোক বাহনে চলা লোকের থেকে ভালো হবে।

তখন একজন জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ: ঐ সময়ে আমাদের কি করতে বলেন?

উনি ﷺ বললেন:
ঐ সময়ে, যার উট আছে সে যেন তার উটের সাথে থাকে।
যার ভেড়া আছে সে যেন তার ভেড়ার সাথে থাকে।
যার জমি আছে সে যেন তার জমির সাথে থাক।

যার এগুলো কিছুই নেই সে যেন তার তলোয়ার নিয়ে বেরিয়ে যায়।
এর পর ধারালো দিক দিয়ে পাথরের উপর আঘাত করতে থাকে।
এর পর যখন পালাতে পারবে তখন যেন পালিয়া যায়।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36412 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=1


টিকা: পাথরের উপর আঘাত হানবে তলোয়ার ভোতা করে ফেলার জন্য।

হাদিস - ৩

সায়িদ বলেছেন যে,
ফিতনা দেখা দেবে।
তখন বসে থাকা লোক, দাড়ানোদের থেকে ভালো হবে।
দাড়ানো লোক, হেটে চলাদের থেকে ভালো হবে।
হেটে চলা লোক, ছুটে চলাদের থেকে ভালো হবে।
ছুটে চলা লোক, সাওয়ারিদের থেকে ভালো হবে।
সাওয়ারিরা, পদস্থদের থেকে ভালো হবে।

বর্ননাকারীদের মাঝে আবিদা এটাকে মারফু [ মানে রাসুলুল্লাহ ﷺ এর কথা ] হিসাবে বর্ননা করেছেন কিন্তু আব্দুল আ'লা মারফু হিসাবে বর্ননা করেন নি

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36413 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=2

হাদিস - ৪
খালিদ বিন সুবাই বা সুবাই বিন খালিদ বলছেন:
আমি কুফায় আসলাম। সেখানে অনেক বাহনের ডাক শুনতে পারলাম। আমি কুফার মসজিদে গেলাম। একজন লোক আসলেন এবং সমস্ত লোক উনার চারদিকে জমে গেলেন।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম: উনি কে?
জবাব দিলো: হুজাইফা বিন ইয়ামান।

আমি উনার পাশে বসে পড়লাম। উনি বললেন:
মানুষজনেরা নবী ﷺ কে ভালো জিনিষ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন। আমি জিজ্ঞাসা করতাম খারাপ সম্পর্কে।

আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম:
: ইয়া রাসুলুল্লাহ, দেখছেন আমরা এখন যে ভালোর মাঝে আছি। এর আগে কি খারাপ ছিলো? আর এর পরে কি খারাপ আসবে?
উনি ﷺ বললেন:
: হ্যা।
: এর থেকে রক্ষা কিসে?
: তলোয়ারে।
: ইয়া রাসুলুল্লাহ ﷺ, তলোয়ারের পরে কি কিছু বাকি থাকবে?
: হ্যা। এর পর সন্ধি।
: সন্ধির পরে?
: বিশৃংখলার দিকে ডাক দেয়া হবে। যদি তুমি তখন কোনো খলিফাকে দেখো, তবে তার আনুগত্য করবে। যদিও সে তোমার পিঠে বেত্রাঘাত করে, আর তোমার মাল কেড়ে নেয়। আর যদি খলিফা না থাকে, তবে পালাও যতক্ষন না তোমার মউত আসে এই অবস্থায় যে তুমি গাছ কামড়ে ধরে আছো।
: ইয়া রাসুলুল্লাহ ﷺ এর পর কি হবে?
: দাজ্জাল বের হবে।
: ইয়া রাসুলুল্লাহ ﷺ, দাজ্জাল কি নিয়ে আসবে?
: সে আসবে আগুন আর ঝর্না নিয়ে। যে তার আগুনে পড়বে সে পুরস্কার পাবে, তার গুনাহ কমে যাবে। যে তার ঝর্নায় পড়বে, তার পুরস্কার কমে যাবে, সে গুনাহ পাবে।
: ইয়া রাসুলুল্লাহ ﷺ, দাজ্জালের পর কি?
: তোমাদের কোন একজন ঘোড়ায় জিন চড়িয়ে তাতে উঠার সময় পাবে না, কিয়ামত চলে আসবে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36414 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=3

হাদিস - ৫

হুজাইফা রা: বলেছেন:
রাসুলুল্লাহ ﷺ কে মানুষ ভালো জিনিষ নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেন। আমি খারাপ জিনিষ নিয়ে জিজ্ঞাসা করতাম। ভালো গুলো সম্পর্কে [মানুষদের কাছ থেকে] জেনে নিতাম যেগুলো শুনিনি।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম: ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ এই ভালোর পরে কি কোনো মন্দ আসবে?“
উনি ﷺ জবাব দিলেন, "হ্যা হুজাইফা! আল্লাহর কিতাব, এতে যা আছে তা অনুসরন করবে।”

আমি এটা তিন বার জিজ্ঞাসা করেছিলাম।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম: “ইয়া রাসুলুল্লাহ এই ভালোর পরে কি কোনো মন্দ আসবে?”
উনি ﷺ জবাব দিলেন, “ফিতনা আর খারাপ”
: ঐ খারাপের পর কি ভালো আসবে?
: হ্যা, হুজাইফা! আল্লাহর কিতাব, এতে যা আছে তা অনুসরন করবে।" তিনবার বললেন।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম: “ইয়া রাসুলুল্লাহ এই ভালোর পরে কি কোনো মন্দ আসবে?”
জবাব দিলেন, “অন্ধ আর বধির ফিতনা। তখন [কিছু লোক] মানুষকে জাহান্নামের দরজার দিকে ডাকবে। হুজাইফা! তুমি যদি গাছের শেকড় কামড় দেয়া অবস্থায় মরেও যাও তবে সেটা তোমার জন্য ভালো, ঐ লোকদের কাউকে অনুসরন করা থেকে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36415 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=4

বুঝলাম,
ফিতনা বলতে যেসব জায়গায় মুসলিমে মুসলিমে যুদ্ধ বুঝিয়েছে, সে ক্ষেত্রে যারা ঐ যুদ্ধগুলোর দিকে ডাক দেয়, তারা।

হাদিস - ৬

আব্দুল্লাহ বিন আমর রা: বলেছেন,
আমরা একসময় রাসুলুল্লাহ ﷺ এর চারদিকে বসা ছিলাম।
উনি ﷺ ফিতনার কথা আলোচনা করলেন বা অন্য কেউ প্রসংগ তুললো।
তিনি ﷺ বললেন,

যখন দেখবে মানুষ তাদের ওয়াদা ভঙ্গ করছে,
আমানত খিয়ানত করছে,
এবং এই রকম হয়ে গিয়েছে
বলে উনি উনার আংগুলগুলো একে অন্যটার ভেতর ঢুকালেন।

তখন আমি দাড়িয়ে উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম,
ঐ সময়ে আমি কি করবো? আল্লাহ আমাকে আপনার মুক্তিপন বানান।

তখন উনি ﷺ আমাকে বললেন,

তখন নিজের বাসায় থাকবে,
নিজের জিহ্বাকে সংযত রাখবে,
যেটা জানো সেটা গ্রহন করবে,
যেটা খারাপ জানো, করো সেটা পরিত্যগ করবে,
তোমার দায়িত্ব শুধু তোমার নিজের বিষয় দেখা,
আর জনসাধারনের কাজ পরিত্যগ করবে।

[ মুসান্নাফ ইবনে অবি শায়বা - 36416 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=5

হাদিস - ৭
আবু সাইদ রা: বলেছেন,
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
এটা হতে যাচ্ছে যে কোনো মুসলিমের উত্তম সম্পদ হবে ভেড়া যেটা নিয়ে সে ভালো লাগা কোনো পাহাড়ে চলে যাবে যেখানে বৃস্টি পড়ে। তার দ্বীন নিয়ে ফিতনা থেকে পলানোর জন্য।

[ মুসান্নাফ ইবনে আনি শায়বা - 36417 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=6

হাদিস - ৮
হুজাইর বিন রাবী বলেছেন:
ইমরান বিন হুসাইন আমাকে বললেন,
তোমার কওম এসেছিলো, এর পর এই বিষয়ে কম করতে তাদের নিষেধ করা হয়েছিলো।

আমি বললাম,
আমি তাদের মাঝে থাকি, তবে তাদের অনুসারি না।

উনি বললেন,
তাহলে আমার পক্ষ থেকে তাদের জানিয়ে দিও যে, এক জন হাবশি গোলাম হয়ে পাহাড়ের চুড়ায় ছাগল পালন করা যতক্ষন না আমার মৃত্যু আসে, আমার কাছে বেশি প্রিয়, কোনো কাতারে ভুল কোনো তীর নিক্ষেপ বা আঘাত করার থেকে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36418 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=7

টিকা:
কম করা: কাউকে তার প্রাপ্য থেকে কম দেয়া। বেইনসাফ করা।

হাদিস - ১০
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা: বলেছেন,
ফিতনা দেখা দিবে। আরবদের উপর ফোটায় ফোটায় পড়বে।
সে সময় কতলকারী জাহান্নামে যাবে।
সে সময় জিহ্বা, তলোয়ারের আঘাত থেকেও প্রচন্ড হবে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36420 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=9

হাদিস - ১২

মুজাহিদ রা: বলেছেন,
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
কিয়ামতের আগে রাতের আধার টুকরার মত ফিতনা দেখা দিবে।
সকালে এক জন মুমিন থাকবে, তো সন্ধায় সে কাফির হয়ে যাবে।
সন্ধায় মুমিন থাকবে, তো সকালে কাফির হয়ে যাবে।
মানুষ তার দ্বীনকে দুনিয়ার মালের বিনিময়ে বিক্রি করে দেবে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - ৩৬৪২২ ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=11

হাদিস - ১৪
আবু জর রা: বলছেন,
রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাকে বলেছেন
: হে আবু যর। যখন তুমি দেখবে মানুষ একে অন্যকে কতল করছে এমন কি “হিজারাতু জাইত” পর্যন্ত রক্তে ডুবে গিয়েছে তখন তুমি কি করবে?
: আল্লাহ আর উনার রাসুল ভালো জানেন।
: তুমি নিজের বাসায় ঢুকে যাবে।
: আমি কি অস্ত্র বহন করবো না?
: যদি এটা তোমার বিষয় হয়।
: তখন আমি কি করবো, ইয়া রাসুলুল্লাহ ﷺ ?
: যদি ভয় পাও সূর্যরশ্মি তোমাকে পরাজিত করছে তবে তোমার জামার অংশ দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলবে। সে তোমার আর তার নিজের পাপের বোঝা নেবে।


টিকা:
হিজারাতু জাইত: মদিনার হাররা এলাকার একটা জায়গা।
সূর্যরশ্মি পরাজিত: তোমাকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করছে।

বুঝলাম,
এখানে হাররার যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে যখন মদিনা শরিফে গনহত্যা করা হয়েছিলো।

[ মুসান্নাফ ইবনে অবি শায়বা - 36424 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=13

হাদিস - ১৬
হুজাইফা রা: বলেছেন:

আধার রাত্রির টুকরার মত তোমাদের উপর ফিতনা আসবে। তাতে ধ্বংশ হয়ে যাবে প্রত্যেক সাহসী বীর, প্রত্যেক স্থির সাওয়ারী আর প্রত্যেক দক্ষ বক্তা।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36426 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=15

হাদিস - ২০

শাকিক বলেছেন:
হুজাইফা রা: বলেছেন:
আমরা ওমর রা: এর সাথে বসে ছিলাম। উনি জিজ্ঞাসা করলেন:
“তোমাদের মাঝে কে রাসুলুল্লাহ ﷺ এর ফিতনা সম্পর্কিত হাদিস মুখস্ত করে রেখেছো যেভাবে উনি বলেছিলেন?”

বললাম, “আমি।”

: তুমি তো দুঃসাহসী। কিভাবে?

: আমি শুনেছি রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: একজন মানুষের ফিতনা হলো তার পরিবার, তার মাল, সে নিজে, তার সন্তান আর তার প্রতিবেশি। এর ক্ষমা হলো রোজা আর সদকা।

: আমি এটা জানতে চাইনি। আমি জানতে চাইছি ওটা সম্পর্কে যেটার ঢেউ হবে সমূদ্রের ঢেউয়ের মত।

: তাতে আপনার আর তার কি আমিরুল মু'মিনিন? আপনার আর তার মাঝে একটা দরজা আছে, বন্ধ।

: দরজাটা কি ভাঙ্গা হবে নাকি খুলা হবে?

: না। বরং ভাঙ্গা হবে।

: সেটা হলে, চেস্টা করলেও সেই দরজা আর কখনো বন্ধ করতে পারবে না।

আমরা হুজাইফা রা: কে জিজ্ঞাসা করলাম,
: ওমর রা: কি জানতেন দরজাটা কে?

: হ্যা। যে রকম আমি জানি রাতের পরে দিন। আমি উনাকে এমন হাদিস বর্ননা করেছি যেটাতে প্রশ্ন তোলার মত কিছু ছিলো না।

শাকিক বলছেন:
আমরা ভয় পেলাম হুজাইফা রা: কে জিজ্ঞাসা করতে, ঐ দরজাটা আসলে কে? তাই আমরা মাসরুককে বললাম, আপনি বরং উনাকে জিজ্ঞাসা করেন।

উনি জিজ্ঞাসা করলেন।

হুজাইফা রা: জবাব দিলেন: “ওমর।”

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36430 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=19

হাদিস - ২৪

হুজাইফা রা: বলেছেন,
রাসুলুল্লাহ সা: বলেছেন,

ফিতনা দেখা দিবে।
অন্ধ ও বধির হয়ে যাওয়া মানুষদের জাহান্নামের দরজার দিকে ডাকা হবে।

হুজাইফা! তুমি যদি গাছের শেকড় কামড় দেয়া অবস্থায় মরেও যাও তবে সেটা তোমার জন্য ভালো, ঐ লোকদের কাউকে অনুসরন করা থেকে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36434 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=23

বুঝলাম:
ফিতনা মানে দন্ধ-বিশৃংখলা-কনফিউশন-গৃহযুদ্ধ দেখা দেবে। এই সময়েই কিছু লোক মানুষকে ডাকবে এমন পথে যেটা জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে।

মানুষ তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে জাহান্নামের দিকে যেতে থাকবে। অন্ধের মত হককে দেখবে না। বধিরের মত সঠিক কথা শুনবে না।

ঐ সময়ে আমি কারো ডাকে সাড়া দিবো না। বরং গাছের শিকড়ের মত স্থীর থাকবো একজায়গায়। একেবারে কামড় দিয়ে ধরে থাকার মত। এই অবস্থায় মৃত্যুও ভালো।

হাদিস - ৩২
হুজাইফা রা: বলেছেন,
ফিতনা আসবে।
তখন সন্দেহ জনক বিষয় বাড়বে, পরিস্কার বিষয় চলে যাবে।
তখন ঐ বেদুইন সম্মানিত হবে, যে লাঠিতে ভর করে তার ভেড়ার পেছনে থাকবে।
এবং সে তোমাদের স্রোতের সাথে চলবে না।

[ মুসান্নফ ইবনে আবি শায়বা - 36442 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=31

হাদিস - ৪০
মুহাম্মদ বিন মাসলামা রা: বলেছেন:
রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাকে একটা তলোয়ার দিয়ে বললেন:

এটা দিয়ে তুমি মুশরিকদের কতল কর, যাদের কতল করা হয়।
আর যখন দেখবে মানুষদের একদল অন্যদলকে মারছে – বা এরকম কোনো কথা বললেন,
তখন এটা নিয়ে তুমি পাথরের কাছে চলে যাও এবং এটা দিয়ে পাথরের উপর মারতে থাকো যতক্ষন না এটা ভেঙ্গে যায়।

এর পর নিজেকে নিজের বাসায় আটকে রাখো যতক্ষন না তোমার কাছে খারাপ কোনো হাত আসে বা মৃত্যুর লিখনি চলে আসে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36450 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=39

হাদিস - ৪৮

আলী রা: বলেছেন,
এই উম্মার জন্য আল্লাহ তায়ালা পাচটি ফিতনা রেখেছেন।
সর্বসাধারনদের ফিতনা,
এর পর বিশেষ ব্যক্তিদের ফিতনা,
এর পর সর্বসাধারনদের ফিতনা,
এর পর বিশেষ ব্যক্তিদের ফিতনা,
এর পর ঢেউয়ের মত ফিতনা, সমূদ্রের ঢেউয়ের মত।
মানুষ তাতে সাতার কাটবে গরু-ছাগলের মত।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36458 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=47


যা বুঝলাম,
শেষ যুগে সমূদ্রের মত ফিতনা আসবে।

হাদিস - ৬৪
আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা: বলেছেন,
রাসুলুল্লাহ ﷺ বিদায় হজ্জে বলেছেন,

সাবধান! আমার পরে তোমরা একে অন্যের ঘাড়ে আঘাত করে কুফরিতে ফিরে যেও না।

[ মুসান্নাফ ইবনে অবু শাইবা - 36474 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=63

হাদিস - ৮০
আব্দুল্লাহ রা: বলেছেন,
যখন উসমান রা: উনার কাছে হুকুম পাঠালেন মদিনার দিকে বেরিয়ে যেতে।
তখন মানুষেরা উনার কাছে আসলো।

তারা তাকে বললো:
দাড়ান। আপনি বের হবেন না। আমরা আপনাকে নিষেধ করছি।
উনার কাছ থেকে আপনার কাছে অপছন্দনীয় কিছু আসবে না।

আব্দুল্লাহ বললেন:
শিগ্রি ঘটনা ঘটবে এবং ফিতনা দেখা দিবে।
আমি এটা পছন্দ করি না যে আমি প্রথম এটা খুলবো, অথচ উনি আমার আনুগত্য প্রাপ্য।

মানুষ এর পর একে একে চলে গেল এবং উনি বের হলেন।

[ মুসান্নাফ ইবনে অবি শায়বা - 36490 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=79


ব্যখ্যা:
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: তখন কুফায় বাইতুল মালের দায়িত্বে ছিলেন। উথমান রা: উনাকে কুফা থেকে চলে আসতে আদেশ পাঠান। কুফা বাসীরা উনাকে পছন্দ করতো বলে উনাকে যেতে বাধা দেয়। এবং নিশ্চয়তা দেয় তাদের সাথে থাকলে, উনার উপর শাস্তি আসলে তারা বাধা দেবে।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: তখন বলেন: ফিতনা শিগ্রই আরম্ভ হবে। তবে ফিতনাটা আমি আরম্ভ করতে চাই না। এবং উথমান রা: কে আমি বায়াত দিয়ে রেখেছি তাই হুকুম মানবো।

হাদিস - ৯৬

হুজাইফা রা: বলেছেন,
আল্লার শপথ!
তাদের উপর কোনো হুকুম আসার পর তারা এটা নিয়ে শোরগোল করলে,
সবসময় এর পরে এমন হুকুম আসবে যেটার কারনে তারা ব্যতিব্যস্ত হয়ে যাবে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36506 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=95


যা বুঝলাম,
সরকারী হুকুমের প্রতিবাদ করলে এর পরের হুকুমটা আরো খারাপ আসবে।

হাদিস - ১২৮
আলী রা: কিছু লোককে পাঠালেন মুহাম্মদ বিন মাসলামা রা: কে উনার কাছে নিয়ে আসার জন্য।

তাদের বলে দিলেন, যদি সে না আসতে চায় তবে তাকে বহন করে নিয়ে আসবে।

উনি আসতে অস্বিকৃতি জানালেন।

আগন্তুকরা বললেন, আমাদের হুকুম করা হয়েছে যদি উনার কাছে আপনি না যেতে চান তবে, আপনাকে বহন করে উনার কাছে নিয়ে যেতে।

উনি জবাব দিলেন, তাহলে তোমরা ফিরে যাও এবং উনাকে বলবে:

আপনার চাচাতো ভাই আর আমার বন্ধু আমাকে জানিয়েছেন,

শিগ্রই ফিতনা, বিভক্তি ও বিতর্ক দেখা দিবে।
তখন তুমি বাসায় বসে থাকবে এবং তোমার তলোয়ার ভেঙ্গে ফেলবে।
যতক্ষন না তোমার উপর মৃত্যুর লিখনি চলে আসে, অথবা কোনো অপরাধীর হাত আসে।
তাই আল্লাহকে ভয় কর হে আলী। এবং তুমি সেই অপরাধীর হাত হয়ো না।

তারা ফিরে এসে আলী রা: কে এই কথা বললো।
তিনি বললেন: তার জন্য দোয়া করো।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36538 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=127

নং - ২৫৬
সাল্লাম বিন শুরাহবিল বলেছেন,
আবি হারথামা বলেছেন,

উনার ভেড়াটা মল ত্যগ করছিলো। এটা দেখে উনি উনার দাসীকে বললেন,

হে জারদা, এই গোবর গুলো আমাকে একটা হাদিসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে যেটা আমি আমিরুল মু'মিনিনের কাছ থেকে শুনেছিলাম। আমি তখন উনার সাথে কারবালায় ছিলাম। আমরা একটা গাছের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম যার নিচে হরিনের গোবর ছিলো। উনি সেখান থেকে এক মুঠ তুলে নিয়ে এর গন্ধ শুকলেন এবং বললেন,

এর পিঠ থেকে সত্তর হাজার লোক হাশরের ময়দানে উঠে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।


টিকা: “এর পিঠ” মানে এই মাটি থেকে, এই জায়গা থেকে।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা - 36666 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=255

হাদিস - ৫১২

আতা বিন সায়িব উনার পিতা থেকে বলছেন,

আব্দুল্লাহ বিন আমর আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথা থেকে এসেছে?”

বললাম, “কুফা থেকে।”

উনি বললেন, “যার হাতে আমার প্রান! তোমরা ঐ জায়গা থেকে আরব ভুমিকে চালাবে। কাফিজ বা দিরহামের মালিক হতে পারবে না। এর পর তোমাদের সাহায্য করা হবে না।”


টিকা: কাফিজ খাদ্যশস্যের মাপ। কাফিজ দিরহাম পাবে না ব্যখ্যা করা হয়েছে: খাদ্য ও অর্থ পাবে না। অন্য হাদিসে কি কারনে এবং কখন পাবে না সে বর্ননা আছে।

ব্যখ্যা:
এর বিভিন্ন ব্যখ্যার মাঝে আছে, ওমর রা: এর যুগে কাফিজ দিরহাম বন্ধ করে নতুন মাপ চালু করা করা থেকে আরম্ভ করে সম্প্রতি ইরাকের উপর জাতিসংঘের অবরোধ।

এই অবরোধ যদি বুঝিয়ে থাকে তবে ধরে নিতে পারি এখন থেকে ইরাকিরা আর কোনো সাহায্য পাবে না।

আল্লাহ জানেন।

[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - 36917 ]
http://library.islamweb.net/hadith/display_hbook.php?indexstartno=0&hflag=&pid=58353&bk_no=96&startno=511