চিকিৎসার জন্য মাঝে এক বছর সিংগাপুর গিয়েছিলাম। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বুঝলাম জোহর

 
Written By Sanjir Habib On Mar-22nd, 2016

চিকিৎসার জন্য মাঝে এক বছর সিংগাপুর গিয়েছিলাম। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বুঝলাম জোহর পড়তে হবে নয়তো বাসায় পৌছতে পৌছতে নামাজ কাজা।

মসজিদ আছে অনেক। ম্যপ ঘেটে দ্রুত কাছেরটা বের করে ফেললাম। একটা রেসিডেন্সিয়াল এরিয়ায়। হেটে যেতে হবে।

কাছে গিয়ে দেখি বিশাল কনসার্ট হচ্ছে কোথাও। গান বাজনা। মসজিদের কাছে গিয়ে দেখি মসজিদেই কনসার্ট। মসজিদের ভেতরে না, কিন্তু প্রতিটা মসজিদের পাশে সোসিয়ালাইজেশনের জন্য কিছু জায়গা থাকে, সেখানে।

নামাজে দাড়ালে বুজুর্গদের কানে আর কিছু যায় না। আমার কানেও কিছু যায় না, কিন্তু সেটা যতটা না আল্লাহর ধ্যানে, তার থেকে বেশি দুনিয়া ধ্যনে। কি চিন্তা কোথা থেকে আসে জানি না, কিন্তু নেট ইফেক্ট হলো বাইরের শব্দ তখন আর ডিসটার্ব করে না।

মুসাফির, দুই রাকাত কসর পড়লেই হয়ে যায়। সেটা করে এর পর বেরুলাম কনসার্টের রহস্য ভেদ করতে।

বের করলাম কনসার্ট না, বাচ্চাদের ইসলামি গানের প্রতিযোগীতা হচ্ছে।

আর মিউজিক? না মিউজিক যেটা মনে করেছিলাম সেটা আসলে শুধু মাত্র “দফ"। ঢোলের মত। যেটা শাফেয়ি মাজহাব মতে বাজানো জায়েজ।

এবং মালয়েশিয়া সিংগাপুরে সবাই হলো শাফেয়ী।

হারাম কিছু পেলাম? আমি পাই নি, তাদের মাজহাব মতে তারা ঠিক। বাকিটা আলেমরা বলতে পারবে।


শাফেয়ি মাজহাবে ওয়াজিব বলে কিছু নেই। কোনো কাজ হয় সুন্নাহ নয়তো ফরজ।

ছেলেদের দাড়ি রাখা হলো হানাফি মাজহাবে ওয়াজিব।

শাফেয়ি মাজহাবে দাড়ি? ওয়াজিব করার সুযোগ নেই। তাই কারো মতে ফরজ, অন্য কারো মতে সুন্নাহ। এবং সাধারন ভাবে গ্রহন করা হয় সুন্নাহ মতটা।

কেউ আওয়াজ তুলতে পারেন “আমি নেটে অমুক পিডিএফে বইয়ে পড়েছি দাড়ি রাখা চার মাজহাবে ফরজ! আপনি কই পান এই সব ফতোয়া?”

পিডিএফটা সালাফি-হাম্বলিদের লিখা। হাম্বলি মাজহাবে দাড়ি রাখা ফরজ। এবং সেটা প্রমান করতে চার মাজহাবের যেই যেই ইমামদের মতে দাড়ি রাখা ফরজ শুধু সেই মতগুলো কালেক্ট করা হয়েছে। অন্যগুলো বাদ দেয়া হয়েছে। আমি উপরে মেইনস্ট্রিম মত উল্লেখ করেছি। অধিকাংশ যেটা গ্রহন করে সেটা।

এর পর মিশরের বিখ্যাত আলেম সাইয়েদ কুতুবের ছবি চোখে পড়লো এক দিন। দাড়ি নেই।

খারাপ ধারনা করবো? উহু। উনি ছিলেন শাফেয়ি মাজহাবের অনুসারি। এবং শাফেয়ি মাজহাবে দাড়ি রাখা সুন্নাহ। উনি সুন্নাহর এই উপর আমল করেন নি। এতটুকু।


মাঝে মাঝে কোনো মুসলিমকে পাপী মনে হতে পারে।
কিন্তু মাজহাবের পার্থক্যগুলো জানলে তখন আর সেটা মনে হয় না।

আমার মাজহাবের নিয়ম তার উপর খাটালে চলবে না।
তার মাজহাবে সে ঠিক আছে।